বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
দৈনিকবিডিনিউজ৩৬০ ডেস্ক : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের মধ্য খোয়ামুড়ি কাটাখালি খালের মাটি চলছে হরিলুট। কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ১ কিলোমিটার এ খালটির মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ সপ্তাহ ধরে ভরাট হয়ে যাওয়া মধ্য খোয়ামুড়ি কাটাখালি খাল থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন লোকজনের কাছে। আর এ মাটি পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ট্রলি। ইতিমধ্যেই খোয়ামুড়ি টেকপাড়া গ্রামের চাঁন মিয়া, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুল জলিল, খোয়ামুড়ি গ্রামের লিয়াকত আলী, মধ্য খোয়ামুড়ি গ্রামের আব্দুল বারেক, বিল্লাল হোসেন, উত্তর বলধারা গ্রামের বুদ্দু মাতবর ও পারিল নওয়াধা গ্রামের কামাল হোসেনসহ অনেকের কাছে মাটি বিক্রি করা হয়েছে। এতে ট্রলি প্রতি ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান ও নারী ইউপি সদস্য সুফিয়া খাতুন অনুমোদনবিহীন খাল খননের অজুহাতে রাস্তা সংস্কারের নাম করে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে এ মাটি বিক্রি করছেন। এ নিয়ে আশপাশের জমির মালিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেউ টু শব্দ পর্যন্ত করতে সাহস পাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, তারা চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ম মেনে খালটি পুনঃখননের অনুরোধ করলেও চেয়ারম্যান তাদের পাত্তা দেননি।
মাটি কাটা কাজের পরিবহণের দায়িত্বে থাকা খোয়ামুড়ি গ্রামের নায়েছ আলীর পুত্র আলম হোসেন (২২) বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব ও সুফিয়া মেম্বার ৬-৭ দিন ধরে এ কাজটি করছেন। এখান থেকে প্রতিদিন ৫০ ট্রলি মাটি নিয়ে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। মাটি কাটতে একটি ভেকু ও পরিবহণের জন্য ৪টি ট্রলি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
সংরক্ষিত আসনের (১, ২ ও ৩) মাটি কাটার সাথে জড়িত নারী ইউপি সদস্য সুফিয়া খাতুন বলেন, মৌখিক অনুমতি নিয়ে ভরাট হওয়া খাল থেকে মাটি কেটে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। তবে কারো বাড়িতে বিক্রি করা হয়নি।
স্থানীয় ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার জানা মতে এটার কোনো অনুমতি নেই। কিন্তু এ বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
বলধারা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি পরিদর্শনে গিয়ে খাল পুনঃখনন করে মাটি দিয়ে রাস্তার কাজ করতে দেখেছি। কোনো বাড়িতে বিক্রি হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি এসিল্যান্ড স্যারকে অবগত করেছি।
বলধারা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান বলেন, ভরে যাওয়া খালের পার্শ্ববর্তী জমির মালিকদের সাথে কথা বলে রাস্তার কাজে মাটি ফেলা হচ্ছে। তবে এখানে কোনো মাটি বিক্রি করা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, মাটি বিক্রির কথা শুনে নায়েবকে পাঠিয়েছিলাম। তার রির্পোট অনুযায়ী ঘরে ঘরে মাটি বিক্রির কোনো সত্যতা পাননি বলে জানান তিনি।
এসএস